মুঘল আমলের সেতুসমূহ পর্ব-২
মুঘল আমলেরসেতু সমূহ পর্ব-২
শাহরিয়ার হাসান মৃধা রাতুল, প্রধান স্থপতি, মৃধা’জ ড্রয়িং হাউজ, নারায়ণগঞ্জ
মুঘল আমলের সেতুসমূহ –“ঐতিহাসিক: “সেতু” অথবা, “পুল” স্থাপনার হালখাতা। ফিরে দেখা সেকাল:বাস্তব পর্যবেক্ষণ ও যুগোপযোগী চিন্তা-ভাবনা।
সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত প্রাচীন বাংলার বা মুঘল আমলের সেতুসমূহ : :
প্রাচীন বাংলার রাজধানী “সোনারগাঁও”(১২৮১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দ)।যা নারায়ণগঞ্জ এর উপজেলা। ঢাকা থেকে ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই রূপকথার রাজ্য। অধ্যাপক স্বরূপচন্দ্র রায় তার বইতে এই স্থানকে “সুবর্ণগ্রাম” নামে অভিহিত করেছেন। বাংলার বার ভূঁইয়া খ্যাত “ঈশা খান ” এর সাম্রাজ্য এই প্রাচীন “সুবর্ণগ্রাম”। আর পানাম নগরী হলো এই প্রাচীন সোনারগাঁওয়ের অন্তর্গত পরিত্যক্ত এক নগরী। মুঘল শাসনামলে নগরায়নের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই স্থানগুলোতে গড়ে উঠেছে হরেক রকম স্থাপনা।
সোনারগাঁওয়ের এই ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহের মধ্যে রয়েছে – প্রাচীন ইমারত, ক্রোড়ী বাড়ি,সেতু ,ঘাট, মসজিদ, পরিখা, মঠ, নীল কুঠি, কুঠি বাড়ি, দরবার হল, রঙমহল, টাকশাল ও মাদরাসা। মুঘলরা এই বাংলায় যে কয়টি নান্দনিক সেতু স্থাপনা তথা পুল নির্মাণ করেছে তার মধ্যে এই স্থাপনাটি অন্যতম।
মুঘলরা সোনারগাঁও অধিকার করার পরে ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে প্রাচীন সোনারগাঁয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য পানাম নগরীর আশেপাশে অনেক মহা সড়ক ও সেতু নির্মাণ করেন।
এদের মধ্যে যা কিছু অবশিষ্ট তা এখনো পর্যটক ও পুরাতকত্ববিদগণের মনে বিষ্ময়ের উদ্রেক করে। এখানে সেতু তাদের মধ্যে রয়েছে –
- পানাম সেতু
- দালালপুর পুল
- পানাম নগর সেতু
- পিঠাওয়ালীর পুল
মুঘল আমলের সেতুসমূহ -“পানাম সেতু” বা “পানাম পুল”
পানাম সেতুর নামকরণ : :
মুঘল আমলের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শণ “পানাম সেতু “। এই সেতুর অপর নাম “কোম্পানীগঞ্জ কা পুল” বা, “কোম্পানীগঞ্জের সেতু” তবে স্থানীয় লোকজন এই সেতুকে পঙ্খীরাজ পুল নামেই চেনে-জানে।
পানাম সেতুর অবস্থান : :
ঐতিহাসিক এই পানাম সেতু “প্রাচ্যের ড্যান্ডিখ্যাত” নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার অন্তর্গত “পানাম নগরী” সম্বলিত স্থানে অবস্থিত। পানাম সেতুটি সুপ্রাচীন কাল থেকে যে খালের উপরে স্থাপিত তার নাম “পঙ্খীরাজ খাল”। প্রাচীন এই খালটি ঐতিহাসিক “পানাম নগরী” ও “বৈদ্যের বাজার “এর সংযোজক রেখায় অবস্থিত।
পানাম সেতুর ইতিহাস : :
ঐতিহাসিকগণের মতে, সপ্তদশ শতকের দিকে নির্মিত হয় এই ঐতিহাসিক মুঘল স্থাপনা। সেতুটির প্রকৃত নির্মাণ কাল সম্পর্কিত প্রামাণ্য শিলালিপি না থাকলেও স্থাপত্যরীতি বিবেচনা করে ঐতিহাসিকরা এটিকে মুঘল আমলে অর্থাৎ সপ্তদশ শতকে নির্মিত স্থাপনা হিসেবে একমত হয়েছেন। বর্তমানে এই স্থাপনাটি প্রত্নত্বকত্ব অধিদপ্তরের একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি।
পানাম সেতুর গাঠনিক বৈশিষ্ট্য : :
ইট নির্মিত পানাম সেতু দেখতে অবিকল নগর কসবার “মীর কাদিমের সেতুর ” ন্যায়। সেতুর উপরিভাগের কেন্দ্রস্থল থেকে ক্রমশ ঢালু হয়ে নীচে নেমে গেছে। সেতুটি বহুল পুরুত্ব বিশিষ্ট। ত্রি-খিলান যুক্ত এই সেতুর পরিধি অনেকটাই কম। দৈর্ঘ্য ১৭৩ ফুট বিশিষ্ট এবং প্রস্থ ১৪ ফুট বিশিষ্ট। সেতুর মধ্যবর্তী খিলান ,খিলান দুইটি থেকে আকারে বড়। মধ্যবর্তী খিলানের উচ্চতা প্রায়। পার্শ্ববর্তী খিলান ৪.২৪ মিটার উঁচু। সেতুর মধ্যবর্তী স্তম্ভগুলো ২.২১ মিটার করে পুরু। সেতুটির নীচে দিয়ে এখনো জলধারা প্রবহমান ও নৌকা চলাচলের সুব্যবস্থা বিদ্যমান। বর্ষাকালে সেতুর নীচে জলে কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকে। খরার মরশুমে আবার সেতুর নীচের ভাগ শুষ্ক হয়ে মৃতপ্রায় অবস্থা হয়ে যায়।
বর্তমানে এই সেতুর অবস্থা ও ব্যবহার : :
পানাম সেতু বর্তমানে এক রকম অকেজো অবস্থায় পরে রয়েছে।
- এই সেতুর নেই কোন ব্যবহার। পার্শ্ববর্তী নতুন সড়ক নির্মিত হওয়ায় ওই সড়কেই যানবাহন চলাচল করে।যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ, লোকজন চলাচল ও সাময়িক।
- সেতুর কোথাও কোথাও ফাটল দেখা গিয়েছে।
- সেতুর ভাঙা ও ফাটল অংশে সবুজ ঘাস জন্মেছে। ঘাস ও আগাছার ভাগাড় এই সেতু। সবুজ ঘাস জন্মেছে বলে সেতুর অবস্থা এখন গো-চারণ ভূমি।
- স্থানীয় লোকজন ভিজা কাপড় ও জাল শুকাতে এই সেতুর দেয়াল ব্যবহার করে।
- সেতুর নীচভাগ যেন ময়লার স্তুপ ও ভাগাড়।
- পঙ্খিরাজ খালের অবস্থায় নাজুক, খালের পানি দূষিত হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও খালের পানির সংযোগ রেখাও বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কচুরিপানায় পরিপূর্ণ খাল।
- সেতুটি রিকশা ও ভ্যানের গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে
- সেতুর দুই পাশ ময়লা-স্তুপে পরিপূর্ণ।
- তবে ২-৩ রকমের গুই সাপ ও তক্ষকের দেখা মেলে এই সেতুতে। পানাম নগরী তে আগত দর্শনার্থী ও পর্যটকদের এই সেতু ভ্রমণ করতে কখনো ভুল হয় না।
একটা কথা স্বীকার করতে সমস্যা নেই যে, পানাম সেতু বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থিত আর সব মুঘল সেতুর চেয়ে শক্ত, মজবুত ও পরিপোক্ত।
মুঘল আমলের সেতুসমূহ –“দালালপুর সেতু“
অধ্যাপক ক্যানিংহাম তার এক বিবরণীতে “দালালপুর সেতু” সম্পর্কে উল্ল্যেখ করেছেন –
ক্যানিংহামের বিবরণে (১৮৭৯-১৮৮০) সেতুর অভ্যন্তরভাগে ইট নির্মিত দুটি প্রবেশপথ স্তম্ভের উল্লেখ রয়েছে। এতে বসানো রয়েছে ধাপ হিসেবে খোদাই করা ফুলেল নকশা শোভিত একটি কৃষ্ণ পাথর। স্থাপত্য রীতির বিবেচনায় সেতুটি মুগল আমলে নির্মিত বলে মনে করা হয়।
দালালপুর সেতুর নামকরণ : :
পঙ্খীরাজ খালের উপরে নির্মিতব্য আরেক দৃষ্টিনন্দন মুঘল স্থাপনা হলো “দালালপুর সেতু” বা, “দালালপুর পুল”। এই সেতুটি স্থানীয় লোকেদের কাছে দৌলতপুর সেতু নামেও পরিচিত।
দালালপুর সেতুর অবস্থান : :
পানাম নগরীর উত্তরপার্শ্বের পঙ্খীরাজ খাল সম্বলিত স্থানে এই সেতুটি অবস্থিত। এই সেতুটি আমিনপুর থেকে যাত্রা শুরু করে দালালপুর কোম্পানি কুঠি পর্যন্ত বিস্তৃত। বলা চলে, পঙ্খীরাজ খালের দ্বিতীয় সংযোগ সেতু এই সেতু।
দালালপুর সেতুর গাঠনিক বৈশিষ্ট্য : :
দালালপুর সেতুটি ইট নির্মিত। এটি প্রায় পাঁচ ফুট ব্যাস বিশিষ্ট। তবে এতে কালো ব্যাসল্ট পাথরের কোন অস্তিত্ব নেই। প্রাচীন এই সেতুটি ত্রি-খিলান বিশিষ্ট, মধ্যবর্তী খিলানটি পার্শ্ববর্তী খিলান দুটি থেকে অপেক্ষাকৃত বড় আকৃতির। নীচে জলযোগের দারুন ব্যবস্থা রয়েছে। নৌকা চলাচলের সুবিধার জন্য অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত ও উঁচু করে নির্মিত।
মুঘল আমলের সেতুসমূহ –“পানাম নগর পুল “
“পানাম নগর পুল” এর অবস্থান :
ঐতিহাসিক পানাম নগরীর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত পানাম নগর পুল। অপর মুঘল স্থাপনা দালালপুর সেতু এই সেতু থেকে কয়েক গজ দূরবর্তী। সম্প্রতি স্থাপিত পাঁকা রাস্তা এই সেতুর পূর্বদিকে অবস্থিত।
“পানাম নগর পুল” এত ইতিহাস : :
স্থাপত্যরীতি অনুযায়ী,মুঘল আমলের এই সেতু স্থাপনাটি পানাম সেতু ও দালালপুর সেতু নির্মাণের পরবর্তী সময়ে নির্মিত।
“পানাম নগর পুল” এর গাঠনিক বৈশিষ্ট্য : :
পানাম নগর সেতুটি ছোট একটি পরিখার উপরে অবস্থিত। তাই সেতুটিও সংকুচিত গঠনশৈলীর। মুঘল আমলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা – পাগলা সেতুর ন্যায় এই সেতুর দুই পার্শ্বে দুইটি টাওয়ার ছিল। প্রতিটা টাওয়ার এ ফটক বসানো ছিল। বর্তমানে এই টাওয়ার দেখা যায় না। কালের আবর্তে বহু বছর আগেই হারিয়ে গেছে এই টাওয়ার। একটি মাত্র খিলান বিশিষ্ট ছোট এই সেতু। যাতে অপরাপর সেতুর ন্যায় দুই পার্শ্বে ছোট খিলান নেই। সেতুটির এক-তৃতীয়াংশ ইটের গাঁথুনিতে তৈরী। তবে সেতুর নিম্নভাগে কালো ব্যাসল্ট পাথরের একটি বড় আকারের স্তম্ভ সমতলভাবে স্থাপিত। এই স্তম্ভ স্থাপনার উপরেই ইটের গাঁথুনি ও আস্তরণ। পানাম নগর সেতুর দৈর্ঘ্য ২১.৯৫ মিটার, প্রস্থ ৪.৭২ মিটার। সেতুটির অভ্যন্তরভাগে খিলানের উচ্চতা। খিলানপথে এখনো জলযোগ রয়েছে।
পানাম নগর পুল এর বর্তমান অবস্থা : :
পানাম পুল এখন আর টিকে নেই। কালের বিবর্তনে আজ হারিয়ে গেছে।
পিঠাওয়ালীর পুল,সোনারগাঁও।
“পিঠাওয়ালীর পুল” এর অবস্থান : :
সোনারগাঁও কাজী ফজলুল হোক উইমেন্স কলেজ – এর প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত এই “পিঠাওয়ালীর পুল”।যেখান থেকে “সোনারগাঁও লোকশিল্প যাদুঘর” ও “পানাম নগরী” কাছাকাছি অবস্থিত।
“পিঠাওয়ালীর পুল” এর নামকরণ : :
দুই পার্শ্বে সড়কের অবস্থা এমন যে এই পুলটিকে বর্তমানে একটি কচ্ছপের পিঠ বলে মনে হয়। কচ্ছপের পিঠের মতো দেখতে তাই এই পুলের নাম “পিঠাওয়ালীর পুল”।
“পিঠাওয়ালীর পুল” এর ইতিহাস : :
ঐতিহাসিকগণের মতে, এই সেতুর নির্মাণকাল ও নির্মাতা সম্পর্কে দ্বিমত রয়েছেন। অনেকেই মনে করেন, ৪০০ বছরের পুরানো এই সেতুটি সম্রাট শের শাহের শাসনামলে নির্মাণ কাজ শুরু হয়, ঈশা খানের রাজত্বের শেষ দিকে এর পত্তন হয়।
“পিঠাওয়ালীর পুল” এর গাঠনিক কাঠামো : :
পিঠাওয়ালীর পুল একটি মাত্র খিলান বিশিষ্ট। এই সময়ের সড়কের পাশে লাগোয়া সেতুর যে অংশটুকু দেখা যায় তাতে যে, প্যানেল ও খিলানের মস্তকবিন্দু যাচাই করা যায় তা থেকে একথা স্পষ্ট যে এই সেতুটির ছোট দুই খিলান নেই। প্যানেলের দৈর্ঘ্য ১৪ ফুট ৮ ইঞ্চি। এর গভীরতা ২ ইঞ্চি।
পিঠাওয়ালীর সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৬ ফুট। সেতুর উপরিভাগের কেন্দ্রস্থল মধ্যবর্তী স্থান থেকে সুই পার্শ্বে ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে গেছে। তবে অপরাপর সেতুর ন্যায় এই সেতুর ঢালুর তীব্রতা অতো বেশি নয়। সেতুর প্রস্থ ১৪ ফুট, ২ ইঞ্চি। সেতুর দুই পার্শ্বের দেয়ালের পুরুত্ব ২ ফুট।
“পিঠাওয়ালীর পুল” এর বর্তমান অবস্থা : :
বর্তমানে, পুলটির অবস্থা একেবারেই নাজুক। কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সময় বুঝি আসন্ন।
ত্রিবেণী পুল,সোনাকান্দা দূর্গ সংলগ্ন।
“ত্রিবেণী” শব্দটি “ত্রিবৃত্ত” ও “ত্রিবেদ” শব্দ থেকে উদ্ভূত।বাংলা “ত্রিবেণী” অর্থ “তিন নদীর সঙ্গমস্থল বা মোহনা”।
নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার অন্তর্গত সোনাকান্দা (প্রাচীন সুবর্ণ কান্দি) গ্রামে অবস্থিত এই ত্রিবেণী সেতু।
ইতিহাস বিখ্যাত “তারিখ-ই-ঢাকা” গ্রন্থে এই ত্রিবেণী খাল ও সেতু সম্পর্কে উল্ল্যেখ রয়েছে।
সত্যি ই কী ত্রিবেণী খাল ও পুল ছিল ?
প্রাচীন “সুবর্ণকান্দি” (পরিব্রাজক ইবনে বতুতা তার বইতে উল্ল্যেখ করেছেন এই নাম তথা বর্তমান “সোনাকান্দা” গ্রাম পশ্চিমদিকে শীতলক্ষ্যা নদী রেখে মুঘল আমলের ঐতিহাসিক “ত্রিবেণী খাল” হয়ে “সুবর্ণগ্রাম” তথা “সোনারগাঁও” পর্যন্ত বিস্তৃত। এই ঐতিহাসিক খালের উপরে সর্বাপেক্ষা চিত্তাকর্ষক স্থাপনা ছিল এই পুল বা সেতু।
ইতিহাসবেত্তা “দুর্গাদাস লাহিড়ী” তার রচিত “পৃথিবীর ইতিহাস – চতুর্থ খণ্ড” গ্রন্থের ২৫৭ নং পৃষ্ঠায় উল্ল্যেখ করেছেন এই সেতুর কথা।
প্রাচীন এই ত্রিবেণী খাল পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে বিভিন্ন শাখা – প্রশাখা খাল , বিল, নদী-নালা হয়ে পূর্বে ব্রক্ষ্মপুত্র আবার কোথাও কোথাও মেঘনা নদীর সংযোগস্থলে মিলিতে হয়েছে তাই এই স্থানটির নাম “ত্রিবেণী “, বোঝা গেলো।
এক সময়ে সওদাগরদের আনাগোনা থাকলেও আজ এই খ্যাতি শ্রী-হীন। বন্দর থানা সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদী হতে মিরকুন্ডী বিবিজোড়াস্থ ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত ত্রিবেণী খালের কোন অস্তিত্ব এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
ত্রিবেণী খাল সংলগ্ন ত্রিবেণী সেতু ও আজ নেই। সম্প্রতি পুরানো জবুথবু হয়ে যাওয়া সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের প্রয়াস চলছে।
কেল্লার পুল,খিজিরপুর দূর্গ সংলগ্ন।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থিত শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত প্রাচীন “খিজিরপুর দূর্গ”(বর্তমানে, হাজীগঞ্জ কেল্লা নামে পরিচিত)। এই কেল্লা থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত “কেল্লার খাল”।এই খাল বা পরিখা দিয়ে এক সময় মুঘল সম্ৰাট ও শাসকগণ নৌকাযোগে যোগাযোগ করতো বলে জানা যায় প্রাচীন নথি-বই পত্রে। পরবর্তীতে মুঘলরা এখানে একটি সেতু নির্মাণ করেন। “কেল্লার খাল” এর উপরে নির্মিত এই সেতু, তাই তার নাম “কেল্লার পুল”। এই পুলের উপর দিয়েই নারায়ণগঞ্জ থেকে চিটাগাং রোড ও ডেমরা যাওয়ার মাধ্যম।
বর্তমানে নব নির্মিত পুল দেখা যায়। তবে স্থানীয় বহু বয়োজৈষ্ঠ্য লোকেদের মতে, এখানে মুঘল আমলের নির্মিত একটি সেতু ছিল।যা তারা স্বচক্ষে দেখছিলো, কিন্তু আজ নেই।
এই সেতু সম্পর্কিত তেমন তথ্য আর কোথাও পাওয়া যায় না।
ত্রি-মোহনী সেতু
ঈশা খাঁ ত্রি-মোহনীতে প্রাচীন সেতু নির্মাণ করেছেন বলে অনেকের অভিমত। তবে সে সম্পর্কিত কোন নথি -তথ্যাদি বা দলিল নেই।
কদমপুর পুল
প্রাচীন এই “কদমপুর পুল” এর সন্ধান মেলে রেনেল এর ম্যাপ এ। প্রাচীন সুবর্নকান্দি দূর্গ (সোনাকান্দা কেল্লা) ও খিজিরপুর দূর্গ (হাজীগঞ্জ কেল্লা) এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এই কদমপুল পুল। অনুমান করা যায়, প্রাচীন কত্রভূতে এর অবস্থান। বাস্তবে এই পুলের কোন হদিস নেই।
……….চলবে.……… পূর্ববর্তী পর্ব
বিশেষ কৃতজ্ঞতায় : : প্রতিটা সেতু সার্ভে ও ডকুমেন্টেশন এ সহায়তাকারী : : আফনান প্রান্ত,ছাত্র,সাউথ ইস্ট বিশ্ব বিদ্যালয়, ঢাকা।
#mughal_bridges #মুঘল_আমলের_সেতুসমূহ #shahriar_mridha_ratul #পানাম_নগর #মিরকাদিমের_সেতু #হাতিরপুল_ব্রাহ্মণবাড়িয়া
One thought on “মুঘল আমলের সেতুসমূহ পর্ব-২”
Comments are closed.