urban air purifier

Urban Air Purifier প্রকল্প আসলে এক ধরনের “Symbolic Distraction” কোন সমাধান নয়।

Urban Air Purifier প্রকল্প আসলে এক ধরনের “Symbolic Distraction” কোন সমাধান নয়।

Author : Marzea Mithila, Senior Director, AIA, Central New Jersey
সম্প্রতি ঢাকার উত্তরের মেয়র এক বক্তব্যে বলেছেন, তিনি ঢাকায় ৫০ টি Urban Air Purifier লাগাবেন। যার এক একটি এয়ার পিউরিফায়ারের ক্ষমতা হবে ১০০টি গাছের সমান। উনার এই স্টেট্মেন্ট দেখে আমি আমার পুর্ববর্তী আমার সাস্টেইনেবল অ্যান্ড রিজিয়েন্ট ডিজাইন স্টাডিস এর লেখাপড়া জ্ঞানগরিমা সব ভুলে খেয়ে বসে আছি।
Subail Bin Alam ভাই এর লেখা দেখে কিছু ইনসাইট দেবার ইচ্ছে হল-
_______________________________________________________________________
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বারবার বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষে উঠে এসেছে, প্রায়শই দিল্লি ও লাহোরকেও ছাড়িয়ে যায়। এমনকি এখনো লাইভ ট্র্যাকার দেখতে ঢাকাই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় অন্তর্বর্তীকালিন সরকার শহরজুড়ে আউটডোর এয়ার পিউরিফায়ার বসানোর মত “কুইক ফিক্স” উদ্যোগ নিয়েছে।
শুনতে ইনোভেটিভ, তালি পাওয়ার যোগ্য মনে হলেও বাস্তবতা ভিন্ন: আউটডোর এয়ার পিউরিফায়ার অকার্যকর, অপর্যাপ্ত, ব্যয়বহুল এবং বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন। নিচে আমি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব কেন এই উদ্যোগ আমাদের জন্য Feasible হবে না এবং কী হতে পারে কার্যকর বিকল্প।
Urban Air Purifier Dhaka air quality

১. মূল সমস্যা: কাঠামোগত দূষণ, শুধু উপরিভাগের ধুলো নয়

পরিবেশ অধিদপ্তর (DOE) এবং বিশ্বব্যাংক (2023) এর তথ্য অনুযায়ী:
– ৫৮% PM2.5 দূষণ আসে ইটভাটা থেকে
– ১৮% আসে যানবাহন থেকে
– ১০% আসে নির্মাণ ধুলো থেকে
– ১৪% আসে বর্জ্য পোড়ানো, জৈব জ্বালানি, শিল্প থেকে
এই দূষণ সারাক্ষণ তৈরি হচ্ছে। কিছু মোড় বা পার্কে পিউরিফায়ার বসিয়ে এটা বন্ধ করা যাবে না।
২. Urban Air Purifier এর পিছনের বিজ্ঞান যা বলে-
একটি বড় আকারের পিউরিফায়ার প্রতি ঘণ্টায় ৩০,০০০ ঘনমিটার বাতাস পরিষ্কার করতে পারে।
– ২৪ ঘণ্টায়: ৭.২ লাখ ঘনমিটার/দিন
১ বর্গকিমি এলাকায় (১০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত): ১ কোটি ঘনমিটার বাতাস
১টি পিউরিফায়ারে সময় লাগবে:
১ কোটি ÷ ৭.২ লাখ ≈ ১৪ দিন
ঢাকার আয়তন: ৩০৬ বর্গকিমি
দৈনিক পরিষ্কারের জন্য দরকার:
(৩০৬ × ১ কোটি) ÷ ৭.২ লাখ ≈ ৪,২৫০ পিউরিফায়ার
প্রতিটি ইউনিটের দাম (ধরা হয়) $১,০০,০০০ → মোট খরচ ≈ $৪২৫ মিলিয়ন USD (রক্ষণাবেক্ষণ বাদে)

৩. বিদ্যুৎ খরচ ও অপারেশন খরচ

একটি পিউরিফায়ারের বিদ্যুৎ ব্যবহার ধরে নেওয়া হয়:
১৫০–২৫০ ওয়াট/ঘণ্টা
দিনে: ৩.৬–৬ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
বছরে: ১,৩১৪–২,১৯০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
৪,২৫০ ইউনিটের জন্য:
দিনে: ১৫,৩০০–২৫,৫০০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
বছরে: ৫.৬–৯.৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা
এটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে এবং অপারেশনাল খরচও অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে।

৪. বাতাস ও বাতাসের প্রবাহের কারণে পিউরিফায়ার কর্যক্ষমতা-

বাইরের বাতাস সবসময় চলমান। মাত্র ২ মিটার/সেকেন্ডের হাওয়ায় দূষিত বাতাস কয়েক কিলোমিটার ছড়িয়ে যায়। দিল্লির (EPCA, 2020) গবেষণায় দেখা গেছে, পিউরিফায়ারের শুদ্ধ বাতাস কয়েক মিনিটেই দূষিত বাতাসের সাথে মিশে যায়।

৫. অন্য শহর থেকে শিক্ষা: দিল্লির ব্যর্থতা, বেইজিংয়ের সাফল্য

দিল্লি ২০১৯ সালে ঢাকঢোল পিটিয়ে এয়ার পিউরিফায়ার বসিয়েছিল, কিন্তু CPCB জানিয়েছে এর “ এর ফলে কোনো উল্লেখ্যযোগ্য প্রভাব” নেই।
* বেইজিং কেন সফল?
– দূষণের মূল উৎসে (কারখানা, ইটভাটা, গাড়ি) কড়া নিয়ন্ত্রণ
– দীর্ঘমেয়াদি সরকারি পরিকল্পনা (Clean Air Action Plan)
– গণপরিবহন ও ইলেকট্রিক যানবাহনে বিনিয়োগ
– রিয়েল-টাইম এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং ও জনসচেতনতা
* দিল্লি কেন ব্যর্থ?
– মূল সমস্যায় না গিয়ে অস্থায়ী ও লোকদেখানো ব্যবস্থা (পিউরিফায়ার, ফগ ক্যানন) *** আমাদের দেশে গত বছর ট্রাক থেকে পানি ছিটানো হয়েছিল মনে হয় !!
– সরকারের ভেতরে সমন্বয়হীনতা ও দুর্বল আইন প্রয়োগ
– দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ ও সীমিত নাগরিক অংশগ্রহণ
– আসল দূষণ উৎস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের অভাব
এক কথায় বলতে গেলে- বেইজিং মূল সমস্যায় আঘাত করেছে, আর দিল্লি লক্ষ্য ভেঙে পিআর প্রচারণায় ব্যস্ত থেকেছে।

৬. রক্ষণাবেক্ষণ ও অবকাঠামোর চ্যালেঞ্জ

– ধুলোতে ফিল্টার বন্ধ হয়ে যাবে কয়েক দিনের মধ্যে
– বৃষ্টি ও ঝড়ে যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে
– বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কাজ বন্ধ করবে
– নিয়মিত পরিষেবা ও রক্ষণাবেক্ষণ লাগবে, যা ঢাকায় নেই
৭. চুরি ও নিরাপত্তা ঝুঁকি
ঢাকায় ম্যানহোল ঢাকনা, বৈদ্যুতিক তারও চুরি হয়।
একটি পিউরিফায়ারে থাকে:
– দামী ধাতু, ইলেকট্রনিক্স
– সহজে বিক্রি হওয়া ফিল্টার
– খোলা তার
নিরাপত্তা ছাড়া এগুলো কয়েক সপ্তাহেই চুরি বা নষ্ট হয়ে যাবে।

৮. কী করা উচিত

– অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা
– ইলেক্ট্রিক বাস/ গাড়ি আমদানি করা
– বর্জ্য পোড়ানো নিষিদ্ধ
– নির্মাণ প্রকল্পের ধুলো নিয়ন্ত্রণ
– গাছ লাগানো, ছাদ বাগান
– স্কুল ও হাসপাতালে HEPA ফিল্টার
– শিল্প ও আবাসিক এলাকা আলাদা রাখা
– জনসচেতনতা ও বায়ু পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক
শুধু বাতাস নয়, নীতিও বিশুদ্ধ করতে হবে। পিউরিফায়ার প্রকল্প আসলে এক ধরনের “Symbolic Distraction” কোন সমাধান নয়। ঢাকায় দরকার সাহসী নীতি, পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়ন Let’s top purifying headlines and start purifying governance. Only then can Dhaka and its people breathe again.
তথ্যসূত্র:
World Bank (2023)
Enhancing Air Quality in South Asia
Department of Environment, Bangladesh (2022)
Air Quality Monitoring Reports
UNEP (2021)
Lessons from Beijing’s Clean Air Action Plan
EPCA (2020)
Evaluation of Outdoor Air Purifiers in Delhi
NDMC & CPCB Reports (2020-2021)
Pilot Purifier Projects, Delhi
IQAir (2024)
World Air Quality Report
  • #Urban_Air_Purifier
  • #ঢাকার_দুষিত_বাতাস #dhaka_air_quality

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *