ভবনের ফায়ার সেফটি

ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান এ যে সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে

ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান এ যে সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে

যে সমস্ত ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক সেই সব ভবনের নকশা রাজউক এ জমা দেবার আগেই ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান প্রস্তুত করতে হবে এবং ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল  ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তারপর সেই অনূমোদনের কপিসহ রাজউকে জমা দিয়ে ভবন নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন গ্রহন করতে হবে। প্রস্তুতকৃত নকশা নিবন্ধিত ফায়ার সেফটি বিশেষজ্ঞ কর্তৃক প্রনীত হতে হবে। স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করার সময় আমাদের অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। নকশার করার সময় স্থপতিদের সুবিধার জন্য নিচের বিষয়গুলি তুলে ধরা হলো।

ভবনের ফায়ার সেফটি

ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান: বেজমেন্ট ফ্লোর

  • বেজমেন্ট ফ্লোর কার পার্কিং ব্যতীত অন্য কোন কাজে যেমন স্টোর/মালগুদাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবেনা।
  • বেজমেন্ট ফ্লোর প্ল্যানে অবশ্যই ভেন্টিলেশন থাকতে হবে।
  • পাম্প রুম ব্যতীত জেনারেটর, সুইচ গিয়ার, সাব-স্টেশন, বয়লার রুম বেজমেন্ট-এ রাখা যাবেনা।
  • বেজমেন্ট সিঁড়ি প্রতি ২০ মিঃ পর পর হবে এবং বেজমেন্ট র‍্যাম্প স্লোপ অবশ্যই ১:৮ হতে হবে।
  • বেজমেন্টে অবশ্যই পর্যাপ্ত বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
  • বেজমেন্ট ফ্লোর এরিয়া ৭৫০ বর্গ মিটারের উর্ধ্বে হলে সেপারেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • বেজমেন্ট-এ পর্যন্ত আলো এবং প্রতি ১০০ বর্গফুট এলাকার জন্য স্বয়ংক্রিয় স্প্রিংকলার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান : গ্রাউন্ড ফ্লোর প্ল্যানঃ

  • জেনারেটর, সুইচ গিয়ার, সাব-স্টেশন, ফায়ার কন্ট্রোল রুম গ্রাউন্ড ফ্লোরে হতে হবে।
  • জেনারেটর, সুইচ গিয়ার, সাব-স্টেশন, ফায়ার কন্ট্রোল রুম ৪ ঘন্টা ফায়ার রেটেড ওয়াল এবং ২ ঘন্টা ফায়ার রেটেড ডোর দ্বারা সেপারেটেড থাকবে।
  • জেনারেটর, সুইচ গিয়ার, সাব-স্টেশন রুম এফ এম-২০০ সাপ্রেশন সিস্টেম দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে।
  • গ্রাউন্ড ফ্লোরে ফায়ার ব্রিগেড কানেকশন থাকবে। ডায়ামিটার (৬৩মিঃমিঃ) ।
  • সকল সিঁড়ি গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হবে এবং তা ছাদে গিয়ে খুলবে।

ভবনের ফায়ার সেফটি

ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান : অন্যান্য ফ্লোর প্ল্যানঃ

  • সকল ফ্লোরে প্রতি ১০০০ বর্গফুট এলাকার জন্য ১টি এবং তদূর্ধ্ব এলাকার জন্য অতিরিক্ত ১টি বহনযোগ্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সংরক্ষণ করতে হবে।
  • বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো জরুরী বহির্গমণ পথে এবং সহজে প্রবেশযোগ্য স্থানে হতে হবে।
  • বহনযোগ্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলোর মধ্যে DCP ও CO2 এর অনুপাত হবে ৭০:৩০।
  • প্রতিটি ফ্লোরে স্মোক/হিট/ মাল্টি ডিটেক্টর স্থাপন করতে হবে।
  • প্রতিটি ১০০ বর্গফুট ফ্লোর এলাকার জন্য ১টি এবং বর্ধিতাংশের জন্য অতিরিক্ত ১টি স্বয়ংক্রিয় স্প্রিংকলার হেড স্থাপন করতে হবে।
  • প্রতিটি ফ্লোরে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইমার্জেন্সি লাইট, স্ট্রোব লাইট, এলার্ম বেল, ম্যানুয়াল কল পয়েন্ট এবং এক্সিট সাইনেজের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
  • প্রতিটি ১০,০০০ বর্গফুট ফ্লোর জন্য ১টি ৩৮ মিঃমিঃ হোজরিল এবং তদুর্ধ এলাকার জন্য অতিরিক্ত আরও ১টি হোজরিল কানেকশন স্থাপন করতে হবে।
  • প্রতিটি ফ্লোরে সিঁড়ির লবিতে ল্যান্ডিং বাল্বসহ ৬৩ মিঃমিঃ ডায়া বিশিষ্ট ইন্টারনাল হাইড্রেন্ট কানেকশন থাকতে হবে।

ছাদ প্ল্যানঃ

  • ছাদের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন স্লোপ ১:২০০ অনুপাতে হবে।
  • ছাদে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে। (২০ ফুট পরপর )
  • ১৫০ ফুটের ঊর্ধ্বে হলে এভিয়েশন লাইট থাকবে।
  • ছাদে ওভারহেড ওয়াটার রিজার্ভারের পাশাপাশি লিফট মেশিন রুম এবং তাতে গমনাগমনের পথ প্রদর্শণ করতে হবে।

সেফটি লবিঃ

সকল ফায়ার স্টেয়ার ও ফায়ার লিফেটের সাথে ৪ ঘন্টা ফায়ার রেটেড ওয়াল এবং ২ ঘন্টা ফায়ার রেটেড ডোর দ্বারা সুরক্ষিত সেফটি লবি থাকবে। সকল সেফটি লবি অবশ্যই পজিটিভ এয়ার প্রেসারাইজড হতে হবে।

পাম্প রুমঃ

  • পাম্প রুমে ১টি মেইন, ১টি স্ট্যান্ডবাই এবং ১টি জকি পাম্প অবশ্যই থাকতে হবে।
  • প্ল্যানে অবশ্যই পাম্প জিপিএম উল্লেখ করতে হবে।
  • পাম্পের সাকশন পজিটিভ সাকশন থাকতে হবে।

ফায়ার স্টেয়ারঃ

  • সকল ফায়ার স্টেয়ার ৪ ঘন্টা ফায়ার রেটেড ওয়াল ও ২ ঘন্টা ফায়ার রেটেড ডোর দ্বারা এবং

পজিটিভ এয়ার প্রেসার দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে।

  • ফায়ার স্টেয়ারের ন্যুনতম প্রশস্থতা ১.৫মিঃ এর কম হবে না।

রাইজার ডায়াগ্রামঃ

  • প্ল্যানে অবশ্যই স্ট্যান্ড পাইপ রাইজার ডায়ামিটার উল্লেখ করতে হবে।
  • আন্ডারগ্রাউন্ড এবং ওভারহেড ওয়াটার রিজার্ভারের আয়তন ও ক্যাপাসিটি উল্লেখ করতে হবে।
  • পাম্প লে-আউট, গ্রাউন্ড ফ্লোরে ফায়ার ব্রিগেড কানেকশন, প্রতিটি ফ্লোরে ৩৮মিঃমিঃ হোজরিল

এবং ৬৩মিঃমিঃ ইন্টারনাল হাইড্রেন্ট পয়েন্ট উল্লেখ করতে হবে।

বয়লার রুমঃ

বয়লার রুম অবশ্যই ভবন থেকে বাহিরে হতে হবে এবং ৪ ঘন্টা ফায়ার রেটেড আরসিসি ওয়াল ও ২ ঘন্টা ফায়ার রেটেড দরজা দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে।

রাস্তাঃ

  • ভবনের সম্মুখের রাস্তার প্রশস্থতা ন্যূনতম ৯ মিঃ এর এবং ভবনের চতুর্পার্শে কমপক্ষে ৪.৫মিঃ

প্রশস্থ রাস্তা থাকতে হবে। যার উর্ধ্ব ক্লিয়ারেন্স ৫ মিঃ এর কম হবে না।

ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান : এসেম্বলি এলাকাঃ

ফায়ার সেফটি প্ল্যানে এসেম্বলি এরিয়া চিহ্নিত করতে হবে।

আরো নির্দেশণা পরবর্তীতে যোগ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *